You are currently viewing ভ্রমণে রুপ সচেতনতা – সুখী সুলতানা

ভ্রমণে রুপ সচেতনতা – সুখী সুলতানা

যখন আপনি গ্রীষ্মের ছুটিতে কোথাও যান, তা বিমান, ট্রেন বা বাসেই হোক চেহারার বারোটা বাজবেই। গ্রীষ্মের ছুটি মানেই আরাম আয়েশে ছুটি কাটাতে দূ‌রে কোথাও ঘুরতে যাওয়া। বেশিরভাগ সময়ই এই গ্রীষ্মের ছুটি শেষে যখন বাড়ি ফেরেন চেহারা আর আগের অবস্থায় থাকেনা। কয়েক পরত কালো ছাপ ও অবাণ্ছিত ছোপ ছোপ দাগ মুখে-হাতেপায়ে দৃশ্যমান হয়। তা সে যেখানেই যান না কেনো, নীল সমুদ্র বা সবুজ বনে ঘেরা পাহাড়ে। ভ্রমণে ত্বককে সহ্য করতে হয় সূর্যের কড়া তাপ, ধুলো, ময়লা, নোনা পানি বা আদ্রতার অত্যাচার। এর সাথে থাকে অতিরিক্ত পরিশ্রমের ক্লান্তি। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ও পানি কম পানের কারণে হয় ডিহাইড্রেশন।

এতসব সমস্যার কথা ভাবলে তো আর ভ্রমণ হবে না। তাই সমস্যা যখন আছে এ সমাধানও আগেভাগে চিন্তা করে নেয়া উচিত।

সূর্যের হাত থেকে সুরক্ষাঃ

নদী , পাহাড়, সাগর যেখানেই যাই না কেনো সূর্যের খরতাপ ত্বক কে পুড়িয়ে দেবেই। তাই সানস্ক্রিন লোশন নির্বাচন করা খুব জরুরি, যার যার ত্বকের ধরণ অনুযায়ী লোশন নির্বাচন করাও খুব জরুরি। সূর্যের আলোতে বের হওয়ার অন্তত ২০ মিনিট আগে তা লাগাতে হবে। নতুবা সানবার্ন, রিঙ্কেল, সানট্যান এরকম সমস্যায় পড়তে হবে।

প্রসাধনীঃ

ভ্রমণে যত কম প্রসাধনী ব্যবহার করা যায় তত ভালো। ফাউন্ডেসন ত্বককে শুষ্ক করে ভ্রমণের সময়। এসময় ট্রিমার বা বি‌বি ক্রিম/ সি‌সি ক্রিম বেশি উপযোগী। লিপস্টিক, কাজল, মাসকারা ওয়াটার প্রুফ হলে ভালো। তবে দিন শেষে পুরো প্রসাধনী পরিষ্কার করে তবেই ঘুমোতে যাবেন। আর একটি জিনিস ভ্রমণে কড়া বা চড়া মেকআপ শোভনীয় নয়। এছাড়া সাথে পাউডার রাখুন। সাগরের পাড়ে ভিজে বালি সহজে ছাড়তে চায়না, তাই সৈকতে যাওয়ার আগে পাউডার গায়ে মেখে নিলে বালি গায়ে লেগে থাকবেনা।

পোশাকঃ

ভ্রমণে সবসময় এমন কাপড় পড়া উচিত যা আরাম দেয়। গরমে সুতি কাপড় ও শীতে উপযুক্ত শীতবস্ত্র সাথে নেয়ার চেষ্টা করুন। কারণ শীতও শরীরের ত্বককে ক্ষতিগ্রস্থ করে। উজ্জল রোদেলা দিনে সাদা বা হালকা রঙের পোশাক পরুন। কালো বা গাঢ় রং উষ্ণতা বাড়ায়।

জলের ছিটাঃ

তপ্ত রোদে ঘোরাঘুরি করায় শরীর পানিশূন্য হয়ে পরে। তাই ভ্রমণে পানির বোতল সাথে তো রাখবেনই ভেজা টিস্যুও সাথে রাখুন, দরকারে চেহারা মুছে নেয়ার জন্য। না থাকলে রুমাল ভিজিয়ে বা পানির ছিটা দিয়ে মুখকে ডিহাইড্রেসন থেকে রক্ষা করুন।য় যার দুদিকে পাইন ঠায় দাঁড়িয়ে।আর চোখ দুটো অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে চির সুন্দরের দিকে।

ত্বকের পরিচ্ছন্নতাঃ

ভ্রমণ শেষে হোটেল রুমে ঢুকেই শুয়ে পড়বেন না । একটু সময় দিন ত্বক পরিষ্কারের জন্য। ত্বক ফেসওয়াস দিয়ে ধুয়ে একটি ময়েশ্চারাইজার লাগান। অল্প যত্ন ত্বককে বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা করবে।

তৈলাক্ত ত্বকের বিশেষ যত্নঃ

ভ্রমণে তৈলাক্ত ত্বক এর সমস্যা বেশি হয়। তাই যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা একটু বেশি যত্ন নেবেন। দিনে সম্ভব হলে কয়েকবার মুখ, ত্বক পরিষ্কার করবেন। চুল পরিষ্কার রাখবেন এবং বেঁধে রাখবেন। ক্যাপ, হ্যাট বা ছাতা ব্যবহার করে রোদ থেকে চুল, মাথা ঢেকে রাখুন। সম্ভব হলে স্কার্ফ ব্যবহার করুন।

পায়ের যত্নঃ

সমুদ্রে খালি পায়ে হাঁটা বা পাহাড়ে ট্র্যাকিং এ পা দুটোর উপড় যথেষ্ট অত্যাচার হয়। ভ্রমণে প্রতিদিন বেলা শেষে পা পরিষ্কার করা উচিত। ফুট ক্রিম, ভেসলিন এজন্য ট্রাভেল ব্যাগে গুছিয়ে রাখুন।

পরিচ্ছন্নতাই সুস্থতাঃ

ভ্রমণে সব যায়গা, সব অবস্থা নিজেদের আওতায় থাকেনা। তাই সব প্রস্তুতি নিয়ে বের হওয়াই ভালো। বাইরে খাওয়ার আগে হাত পরিষ্কারের জন্য হ্যান্ড স্যা‌নিটাইজার লোশন সাথে রাখুন। অপরিষ্কার হাতে খাবার গ্রহণ বা ত্বকে, চোখে, মুখে হাত থেকে জীবানু সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে এটি কাজে দেবে।

পোকা-মাকড় থেকে সুরক্ষাঃ

যে কোন পরিবেশে মশা-মাছি বা পোকামাকড় থেকে রক্ষা পেতে ইন‌সেক্ট রিপ্যালেন্ট নিতে ভুলবেন না।

খাদ্য গ্রহণ করুণ বুঝেঃ

আহা !ছুটির সময় অমন একটু আধ টু হাবিজাবি খাওয়াই যায়। না, এমন ভাবলে আপনি ফলাফল ভালো পাবেন না। এতে যেমন আপনার ওজন বাড়বে, তেমন চেহারায়ও প্রভাব পড়বে। ভাজাপোড়া বা অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলুন। কারণ আপনি আরো অনেকদিন সুন্দর থাকতে চান। ভ্রমণ করতে চান সুস্থ্যভাবে।

ঘুমঃ

ভ্রমণে গেলে এমনিতেই ঘুম ঠিকমত হয়না। তাই চোখের নিচে কালি পরে, চেহারা মলিন হয়। তাই চেষ্টা করুন অন্তত ৬/৭ ঘন্টা ঘুমাতে।

চুলের যত্নঃ

ভ্রমণে চুল পরিষ্কার রাখুন। পারলে প্রতিদিন সকালে শ্যাম্পু করবেন। নাহলে চুল বেঁধে রাখবেন।

সুস্থ দেহে সুন্দর মন, এনে দেবে আনন্দময় ভ্রমণ। ভ্রমণে গিয়ে সুন্দর প্রকৃতির সাথে নিজেকেও সুন্দর ভাবে না পেলে মন ভালো থাকবে কি? সুন্দর সুন্দর সেলফী বা গ্রুপের মাঝে আপনাকেই যেনো সবচেয়ে ভালো লাগে তাই ভ্রমণে বের হওয়ার আগে সেভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করে নিন। ভালোবাসুন নিজেকে, ভালোবাসুন প্রকৃতিকে। পরিচ্ছন্ন মানুষ হোন, রাখুন পরিবেশকেও পরিষ্কার। সফল হোক, সুন্দর হোক সবার ভ্রমণ।

Leave a Reply